নীলফামারীতে বিয়ের ৯ বছর পর একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম

✒️ নিজস্ব প্রতিবেদক:

by Newsroom

নীলফামারীতে বিরল ও আনন্দঘন এক ঘটনার সাক্ষী হলো নিউ এভারকেয়ার হাসপাতাল। বিয়ের দীর্ঘ ৯ বছর পর একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন রেবেকা সুলতানা (২৬) নামে এক গৃহবধূ। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত আনুমানিক ২টার দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম হয় এক কন্যা ও দুই পুত্রসন্তানের। এ ঘটনায় পরিবারে বইছে উৎসবের আমেজ।

রেবেকা সুলতানা নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের সাদুরার পুল বাজার এলাকার বাসিন্দা সাজু ইসলাম স্বপনের স্ত্রী। পেশায় রাজমিস্ত্রি সাজু ঢাকায় অবস্থান করলেও এই খবরে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে রওনা দিয়েছেন পরিবারের কাছে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, রেবেকা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় ভুগছিলেন। প্রায় ৯ মাস আগে তিনি চিকিৎসা শুরু করেন এবং পুরো গর্ভকালীন সময়টিতে নিউ এভারকেয়ার হাসপাতালের অভিজ্ঞ গাইনী চিকিৎসক ডা. মোছা. সুলতানা রাজিয়া (লাকি)-এর তত্ত্বাবধানে ছিলেন।

ডা. রাজিয়া জানান, “রেবেকার গর্ভে একাধিক সন্তান থাকায় ঝুঁকি ছিল বেশি। শুরুতে নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করা হয়, তবে জটিলতা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক সিজারিয়ান অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি কন্যা ও দুটি পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে মা ও নবজাতকরা সুস্থ আছেন এবং নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।”

রেবেকার মা আরজিনা বেগম আবেগভরা কণ্ঠে বলেন, “আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার মেয়ে একসঙ্গে তিন সন্তানের মা হয়েছে। এটা আমাদের পরিবারের জন্য এক বিশাল আশীর্বাদ। চিকিৎসকদের প্রতি আমরা চিরকৃতজ্ঞ।”

পিতা এনামুল হক জানান, “আমার মেয়ে বহুদিন কষ্ট করেছে। অবশেষে আল্লাহ তার কোলে তিনটি সন্তান দিয়েছেন। আমরা আনন্দে আত্মহারা। সবার দোয়া চাই যেন মা ও সন্তানরা সুস্থ থাকে।”

হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. এস এম হাসান ইমাম বলেন, “একাধিক সন্তান ধারণ সবসময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা শুরুতে প্রাকৃতিকভাবে সন্তান জন্ম দেওয়ার চেষ্টায় ছিলাম। কিন্তু রোগীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে অস্ত্রোপচার করি। আলহামদুলিল্লাহ, সফলভাবে সন্তানদের জন্ম দেওয়া সম্ভব হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, “অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার পর রেবেকার রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাই দেরি না করে তাৎক্ষণিকভাবে অস্ত্রোপচার করা হয়। মা ও নবজাতকরা এখন নিরাপদে আছেন।”

একদিকে দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার অবসান, অন্যদিকে সুস্থ তিন নবজাতকের আগমন—সব মিলিয়ে রেবেকা সুলতানা ও তার পরিবার এখন যেন আনন্দে ভাসছে। হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের আন্তরিক সেবায় আনন্দের এই মুহূর্তটি হয়ে উঠেছে আরও নিরাপদ ও স্মরণীয়। পরিবারটি সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন—তিন নবজাতকের ভবিষ্যৎ যেন সুস্থ ও সুন্দর হয়।

You may also like

Leave a Comment