নারীদের শিক্ষিত করার লক্ষ্যে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যে শিক্ষা প্রকল্প চালু করেছিলেন, তা শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিদেশেও প্রভাব ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দিনব্যাপী নীলফামারী জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটি আয়োজিত “রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি“ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার নারীশিক্ষা প্রকল্প দেখে নাইজেরিয়ার সরকারও অনুরূপ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি লন্ডনে এক নাইজেরিয়ান নারীর সঙ্গে বেগম জিয়ার সাক্ষাতে সেই নারী প্রশংসা করে বলেন, “আমি তোমাকে চিনি, তুমি নারীদের জন্য যা করেছো, আমরা জানি। তোমার দেশে যে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছো, তা দেখে আমাদের সরকারও তা অনুসরণ করেছে।” তারেক রহমানের মতে, এটি শুধু বিএনপির জন্য নয়, বরং সারা বাংলাদেশের জন্য গর্বের বিষয়।
কর্মশালায় তিস্তা ইস্যু নিয়ে তিনি বলেন, “তিস্তা আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। যেভাবেই হোক, তিস্তার সমস্যাগুলো সমাধান করে আমাদের একটি জায়গায় পৌঁছাতে হবে। বিগত ১৫ বছর ধরে তিস্তাকে নিয়ে অনেক রাজনীতি হয়েছে, কিন্তু সেই রাজনীতি মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি। আমরা সেই রাজনীতি করতে চাই, যা মানুষের ভাগ্য বদলাবে।”
তিনি আরও বলেন, সরকার এখন যে সংস্কারের চিন্তা করছে, পাঁচ বছর আগেই আমরা সেই সংস্কারের রূপরেখা দিয়েছি। এই সংস্কারের বিষয়টি নতুন নয়। অনেক দল এখন এটিকে নিজেদের ভাবনা বলে দাবি করলেও বাস্তবে তা আজ সমাজে সমাদৃত ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। ভবিষ্যৎ রাজনীতি যেন এক ব্যক্তির হাতে না থাকে, সেই লক্ষ্যেই তার প্রস্তাবনা ছিল। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যারা শরিক হয়েছেন, তারা যদি মিলে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠন করেন, তবে দেশে একটি স্বাভাবিক রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, “সরকার যে সংস্কারের চিন্তা করছে, তারেক রহমান তা পাঁচ বছর আগেই তুলে ধরেছেন। এটাই প্রমাণ করে, বিএনপি বাস্তবভিত্তিক রাজনৈতিক সংস্কারের পথ দেখিয়েছে।”
একই অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, “সংস্কার ও নির্বাচন বিপরীতমুখী নয়, বরং একে অপরের পরিপূরক। কিন্তু একে ইচ্ছাকৃতভাবে মুখোমুখি করে তোলা হচ্ছে।”
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি আ.খ.ম আলমগীর সরকার। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হিরা, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক মিসেস নেওয়াজ হালিমা আরলী, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল এবং বিএনপি নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম।
প্রশিক্ষণ কর্মশালার সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল।
দিনব্যাপী এই কর্মশালায় বিএনপির জেলা ইউনিট ছাড়াও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং বিভিন্ন বিষয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।