ডোমারে আওয়ামীপন্থী ব্যক্তিকে দিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠন, প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি

✒️ নিজস্ব প্রতিবেদক:

by Newsroom

নীলফামারীর ডোমার উপজেলার বামুনিয়া দ্বি-মুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে আওয়ামী লীগপন্থী একজনকে দায়িত্ব প্রদানকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকাজুড়ে। এ ঘটনার জেরে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোস্তফা আলমের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন এলাকাবাসী।

বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে বিদ্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বামুনিয়া ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক আলফাছ সানি, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রিপন ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর বামুনিয়া ইউনিয়ন শাখার সেক্রেটারি আমজাদ হোসেন, স্থানীয় অভিভাবক রুহুল আমিনসহ আরও অনেকে।

বক্তারা অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটিতে পক্ষপাতমূলকভাবে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিকে সভাপতি করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অরাজকতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং নিরপেক্ষতা নষ্ট হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তারা।

মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভকারীরা বিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে গেটের সামনে উপস্থিত প্রধান শিক্ষকের সমর্থকদের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। এতে জামায়াতের এক ওয়ার্ড নেতা মামুনুর রশিদ আহত হন। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।

প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধনে হাজারো এলাকাবাসী

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে প্রধান শিক্ষক মোস্তফা আলম জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং তদন্ত শুরু করে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে প্রধান শিক্ষক মোস্তফা আলমের পক্ষে শিক্ষার্থীরা পাল্টা বিক্ষোভ মিছিল করে। প্রধান শিক্ষক জানান, বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সকলের সম্মতিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড গত ২৩ মার্চ যে কমিটির অনুমোদন দিয়েছে, সেখানে খাদিজা আক্তারকে সভাপতি, হরিপদ রায়কে শিক্ষক প্রতিনিধি, আক্কাছ আলীকে অভিভাবক প্রতিনিধি এবং মোস্তফা আলমকে সদস্য সচিব হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর বামুনিয়া ইউনিয়ন শাখার সেক্রেটারি আমজাদ হোসেন জানান, জুলাই আন্দোলনের পর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সার্কুলার মোতাবেক স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির ব্যাপারে আবেদন করে। এরপর প্রধান শিক্ষক স্থানীয় আওয়ামীলীগ পন্থী সহ বিভিন্ন পদে তার পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠন করে। বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি করায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী নেতৃবৃন্দ এলাকাবাসীদের নিয়ে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন শেষে প্রধান শিক্ষক সবাইকে ডেকে নেন স্কুল প্রাঙ্গনে। এ সময় বিদ্যালয়ের নবগঠিত পরিচালনা কমিটির সভাপতি খাদিজা আক্তারের  স্বামী রিয়াদ ও স্কুল ছাত্রীদের ধাক্কায় মামুনুর রশিদ সাবু নামে জামায়াতের এক ওয়ার্ড নেতা গুরুতর আহত হয়। এ সময় তার হাতের আঙ্গুলে গুরুতর জখম হলে চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডেকেলে নেয়া হয়।

বামুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মমিনুর রহমান বলেন, কাউকে পছন্দ না হলে তা লিখিত অভিযোগ আকারে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো উচিত। এমন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে বালিকা বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে আসেন ডোমার থানার এসআই কাজল কুমারের নেতৃত্বে কয়েকজন ফোর্স। এসআই কাজল বলেন, খবর পেয়ে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাই। পরিদর্শনকালে কোনো ভাংচুরের ঘটনা লক্ষ্য করিনি। অভিযোগ পেলে আরও তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

You may also like

Leave a Comment