বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, আমাদের ব্যাংকিং খাত থেকে আড়াই লাখ কোটি টাকা সরাসরি লুট করা হয়েছে। এরপরও আমাদের ব্যাংকিং খাত ভেঙে যায়নি সাময়িক দুর্বল হয়েছে এটা বলা যেতে পারে। আমরা কিছুটা মচকে গেছি কিন্তু ভেঙে যাইনি।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর আরোপিত রাজস্ব তুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন। এর ফলে অক্টোবর থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এসব পণ্যের আমদানি ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, এ বছরের শেষ নাগাদ মুদ্রাস্ফীতি ৫ শতাংশে নেমে আসবে।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবো না বলেই আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব দিতে চাইলেও তা আমি নিইনি। সে সময়ে সরকারের প্রস্তাব আমি ফিরিয়ে দিয়েছি জেনেবুঝেই। এরপর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর অন্তর্বর্তী সরকার আসার পরে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবো জেনে গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি। এখন স্বাধীনভাবেই কাজ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রদের কারণেই বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান এবং ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধেও ছাত্রদের অবদান অনস্বীকার্য। সর্বশেষ ২০২৪-এর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনই আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, ছাত্ররাই সবকিছু বদলে দিতে পারে। তাদের ওপর সবকিছু নির্ভর করছে।’
নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামানের সভাপতিত্বে এবং নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাফিউর রহমান এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নীলফামারীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহসিন, নীলফামারী জেলা বিএনপির সভাপতি আখম আলমগীর সরকার, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ড. খাইরুল আনাম, নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নলীনি কান্ত রায়, সহকারী শিক্ষক রেজাউল করীম, গভর্নরের বন্ধু রেজাউল আজিম মুক্তি প্রমুখ।
গভর্নর নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষী পুরোনো ভবন, নীলকুঠি ও নীলফামারী রেলস্টেশন সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। পরে তিনি বিদ্যালয়ের শতবর্ষী ভবন পরিদর্শন করেন।