ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী ও নীলফামারী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নুরকে জেলার চারটি মামলায় ভার্চ্যুয়ালি শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়েছে নীলফামারী থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেনের আদালত এ সিদ্ধান্ত দেন।
জিআর ২৬৭/২৪, জিআর ২৬৯/২৪, জিআর ২৭৪/২৪ ও জিআর ৩২০/২৪—এই চারটি মামলায় আদালতে পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে ভার্চ্যুয়ালি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। একযোগে কাশিমপুর কারাগার থেকে যুক্ত হন আসামি আসাদুজ্জামান নুর। অন্যদিকে আদালত প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন বিচারক, কোর্ট ইন্সপেক্টর, চার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর মিরপুর এলাকায় সিয়াম ও মামুন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে আগে থেকেই কাশিমপুর কারাগারে বন্দি ছিলেন নুর। গত বছর (২০২৪ সালের) ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকার বেইলি রোডের নওরতন কোলোনির বাসা থেকে তাকে সিয়াম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ২৯ সেপ্টেম্বর তাকে মিরপুরের মামুন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এরপর নীলফামারীতে বিএনপি নেতা গোলাম রব্বানী ও জামায়াতকর্মী আবু বক্কর সিদ্দিক হত্যাসহ একাধিক মামলায় আসাদুজ্জামান নুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। ৫ ও ১০ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হামলা, ভাঙচুর ও জেলা বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের হয় পৃথক দুটি মামলা। জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুস সালাম বাবলা বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক দুটি মামলাও করেন, যাতে নুরকে প্রধান আসামি করা হয়।
নীলফামারী কোর্ট ইন্সপেক্টর জিন্নাত আলী জানান, চারটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভার্চ্যুয়ালি আদালত পরিচালনা করে আসাদুজ্জামান নুরকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে। তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ছিলেন ইন্সপেক্টর আশরাফ হোসেন ও মামলার চার তদন্ত কর্মকর্তা।”
নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর সাঈদ বলেন, “চার মামলায় আসাদুজ্জামান নূরকে ভার্চ্যুয়ালি গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, আসাদুজ্জামান নুর ২০০১ সালের প্রহসনের নির্বাচনের সংসদ সদস্য, ২০০৮ সালের এক-এগারোর সরকারের কারচুপির নির্বাচনের এমপি, ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচনের প্রতিনিধি এবং ২০১৮ সালের নিশিরাতের নির্বাচন ও ২০২৪ সালের একতরফা নির্বাচনের সংসদ সদস্য ছিলেন।