বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নীলফামারী জেলা শাখার উদ্যোগে জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় আগামী ১৯ এপ্রিল নীলফামারীর জলঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর আমীর ড. শফিকুর রহমান এর জনসভায় মিডিয়া কভারেজ করার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় নীলফামারী প্রেসক্লাবের হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার। তিনি বলেন, “গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ। ন্যায়ের পক্ষে সাংবাদিকদের নিরপেক্ষ অবস্থান এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকা অপরিসীম। সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।”
সভায় সিনিয়র সাংবাদিক ও নীলফামারী প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, আরটিভির জেলা প্রতিনিধি হাসান রাব্বি প্রধান বলেন, “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে সাংবাদিকদের হাতে শিকল পরিয়ে রাখা হয়েছে। এ আইন যেন বাতিল করা হয়, সে বিষয়ে জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমীরের মাধ্যমে সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন জানানোর আহ্বান জানাই।”
জেলা প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আতিয়ার রহমান বলেন, “আমরা সাহসের সঙ্গে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করতে চাই, কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আমাদের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ আইন বাতিলের বিষয়ে আপনাদের (জামায়াতের) মাধ্যমে সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।”
যমুনা টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি মাহমুদ আল হাসান রাফিন সাংবাদিকদের জন্য সাংবাদিক সুরক্ষা আইন দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান এবং এ বিষয়ে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেন।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আন্তাজুল ইসলাম বলেন, “জনসংযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আপনাদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক সংগঠন—উভয় পক্ষ একে অপরের পরিপূরক। আপনারা সত্য বলুন, আমরা সবসময় পাশে থাকবো।”
জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ড. খায়রুল আনাম বলেন, “যখম আমি নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি আমাকে বলা হয়েছিল আমি ক্রসফায়ারের আসামি, সভা-সমাবেশে যেতে পারবো না। নিজের শহরে চলাফেরা করতে পারিনি। সেই সব দিন ভুলে যেতে বলেছে আমাদের আমীর। আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না। এখন আমি বলতে চাই—আমরাও চাই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হোক। সাংবাদিকদের হাত বেঁধে মাঠে নামানো হলে তারা কিছুই লিখতে পারবে না। আমরা চাই মুক্ত সাংবাদিকতা হোক, ভুল থাকলে আমাদের ধরিয়ে দিন, আমরা সংশোধন হব।”
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জেলা জামায়াতের শহর শাখার সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ পাটোয়ারি। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ড. খায়রুল আনাম, সেক্রেটারি মাওলানা আন্তাজুল ইসলাম, জেলা শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মন্টু, জেলা প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি প্রভাষক ছাদের হোসেন, সদর উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবু হানিফা শাহ, শহর শাখার আমীর অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম ও শহর সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আনিছুর রহমান আজাদ।
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং ভবিষ্যতে একটি গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। মতবিনিময় অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে নিয়ে দোয়া পরিচালনা করে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার।