ডোমারে গোবরের তৈরি লাঠি মেটাচ্ছে জ্বালানির চাহিদা

✒️ডোমার (নীলফামারী) থেকে:

by Newsroom

 

একসময় গ্রামাঞ্চলে লতাপাতা কুড়িয়ে জ্বালানির চাহিদা মেটাতেন গৃহবধূরা। কিন্তু বনাঞ্চল নিধন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সেসব জ্বালানি এখন সংকটে। নীলফামারীর ডোমারে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সমাধান হিসেবে এসেছে গোবরের তৈরি লাঠি। রান্নার কাজে এই লাঠি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে তারা অনেকটা স্বস্তি পাচ্ছেন। বনাঞ্চলের সংকট ও খড়ির ঘাটতি কাটাতে এটি একটি কার্যকর বিকল্প হিসেবে কাজ করছে।

সেই গোবর দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে লাকড়ি/খড়ি। সাশ্রয়ী জ্বালানী ব্যবহারের জন্য গরুর গোবরের তৈরি লাকড়ি নীলফামারীর গ্রামাঞ্চলের গরিব গৃহবধূদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তাই সম্প্রতি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গরুর গোবর দিয়ে লাকড়ি তৈরির ধুম পড়েছে।

উপজেলা বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বিশেষ করে নিম্নবিত্ত পরিবারের বধূরা গৃহপালিত গরুর গোবরের লাকড়ি তৈরিতে মেতে উঠেছেন। তারা সকালে ঘুম জেগে গোয়াল ঘরে প্রবেশ করেন। ডালি ভর্তি বের করেন গোবর। গোবরের সাথে মিশ্রিত করা হয় আংশিক পরিমাণের ধানের তুষ। এরপর ২/৩ফুট লম্বা বাঁশের চিকন লাঠি আকারের বা পাটের শলা দিয়ে বধূরা তৈরি করেছেন লাকড়ি।

এসব তৈরিকৃত কাঁচা লাকড়িগুলো শুকানোর জন্য বাড়ির উঠানে রোদে দাঁড় করে রাখা হয়। রোদের তাপমত্রা থাকলে ২/৩দিন পরই শুকিয়ে যায় লাকড়িগুলো। এভাবে নিত্যদিনের তৈরি শুকনো লাকড়ি মজুদ রাখা হয় নিজ ঘরে।

উপজেলার সোনারায় ফার্মহাট এলাকার গৃহবধু স্বপ্না আক্তার ও আতিকা বেগম জানান, আমরা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই গোবরের তৈরী লাঠি দিয়ে সব ধরনের রান্নার কাজ করে আসছি। এটি তৈরী করতে আমাদের আর্থিক খরচ লাগে না। শুল্ক মৌসুমে আমরা অতিরিক্ত পরিমানে গোবরের লাঠি তৈরী করে মজুদ রাখি এবং বর্ষাকালে নিশ্চিন্তে সেগুলো রান্নার কাজে ব্যবহার করি।

সদর ইউনিয়নের কছির উদ্দীন নামের এক কৃষক বলেন, যাদের গরু নাই তারা এলাকার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে গোবর কুড়িয়ে লাঠি তৈরী করে জ্বালানীর চাহিদা মেটাচ্ছেন এবং অনেকে গোবরের লাঠি তৈরী করে তা বিক্রি করেও বেশ ভালোই উপার্জন করেন।

You may also like

Leave a Comment