আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল সফরে গেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরকচি। রোববার এই সফরের মাধ্যমে তালেবান নিয়ন্ত্রিত কাবুলে প্রথম কোনো ইরানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা গেলেন। ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান।
একদিনের এই সফরটি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার এবং পারস্পরিক স্বার্থরক্ষার শক্তিশালী চেষ্টা বলে জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়ি।
আরাকচি তার সফরের প্রথম দিনেই আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে তিনি আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক বিষয়ক উপ-প্রধানমন্ত্রী আবদুল গনি বরাদরের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। এমনটাই জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। আলোচনায় সীমান্ত নিরাপত্তা, রাজনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করা এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সুপেয় পানির অধিকার এবং হেলমান্দ ও হারিরুদ নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণ নিয়ে ইরান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের কিছু টানাপোড়েন চলছে। ইরানের সঙ্গে আফগানিস্তানের ৯০০ কিলোমিটারেও বেশি সীমান্ত রয়েছে। এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম শরণার্থী সংগ্রহকারী দেশ, যেখানে দুই দশকের যুদ্ধের পর দেশত্যাগ করা আফগান শরণার্থীদের অধিকাংশ বসবাস করছে।
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর আফগান শরণার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ইরানের স্থানীয় মিডিয়া জানায়, আফগানিস্তানের সঙ্গে পূর্ব সীমান্তের ১০ কিলোমিটারেও বেশি দীর্ঘ দেয়াল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে ইরানের, যা মূলত শরণার্থী প্রবেশপথ। ইরানের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাদক, চোরাচালান ও অবৈধ অভিবাসী প্রবেশ ঠেকাতে সীমান্ত সুরক্ষিত করার পরিকল্পনা নিয়েছেন তারা। ডিসেম্বরে জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাইদ ইরাভানি বলেছেন, ৬০ লাখেরও বেশি আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে ইরান। ইরান বহু বছর ধরে আফগানিস্তানের সঙ্গে সক্রিয় কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখলেও এখন পর্যন্ত তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি।
বছরের পর বছর ধরে বেশ কয়েকটি ইরানি প্রতিনিধিদল আফগানিস্তান সফর করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ২০২৩ সালের আগস্টে পানির অধিকার নিয়ে আলোচনার জন্য একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদল ইরান সফর করেছিল।