নীলফামারীর ডোমারে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হামলার শিকার হয়েছেন একই পরিবারের তিনজন। জমিতে সরিষা আবাদ নিয়ে শুরু হওয়া এই বিরোধ পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়। হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের হলেও বাদী ও তার পরিবার পুলিশের উদাসীনতার কারনে থানায় মামলা করে বিপাকে রয়েছেন। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও বাদীপক্ষের রয়েছে নানা অভিযোগ।
ডোমার উপজেলার পশ্চিম খামার বামুনিয়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল সৎ ভাইদের মধ্যে। জমিতে সরিষা আবাদ করেন আমিনুর রহমান(৭০) এর ছেলে মামলার বাদী আতিকুর রহমান মিলন। তবে সরিষা কেটে নেয়ার সময় তা আসামীকে না জানিয়ে কেটে নেয়া হয়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে বাদী ও তার ভাই এ নিয়ে কথা বলেন।
এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিপক্ষ বাড়িতে থাকা অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আতিকুর রহমান মিলন, তার ভাই গুরুতর আহত হন। এ সময় আহত হন তারা বাবাও। পরে তাদের ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই আইনি সহযোগিতা চেয়ে গেলো ২৪ ফেব্রুয়ারি ডোমার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন আতিকুর রহমান মিলন(২৯)। তবে মামলার পর থেকেই উল্টো বিপদে পড়েছেন তিনি। আসামিপক্ষ মামলা তুলে নেয়ার জন্য তাকে ও তার পরিবারকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মিলন।
মিলন জানায়, “আসামিরা মামলা তুলে নিতে আমাকে নিয়মিত ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে শারীরিকভাবে ক্ষতি করার হুমকি দিচ্ছে, এমনকি তার কর্মস্থলেও সমস্যা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। পুলিশকে বারবার তথ্য দিলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং পুলিশের নিরবতার সুযোগে তিনজন আসামি জামিনে মুক্ত হয়েছে, আর আসামিপক্ষ আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।”
বাদীর বাবা আমিনুর রহমান(৭০) বলেন, “মামলা করার পর পুলিশ খরচের কথা বলে আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। কিন্তু টাকা কম দেয়ায় মনেহয় তারা গুরুত্ব দিচ্ছে না।”
মামলার ২নাম্বার আসামী মৃত মশিয়ার রহমানের ছেলে মো. মুন্না(২৫) বলেন, ‘মামলার বিবরণ দেখে মনে হয় অনেক টাকার বিনিময়ে মামলা রেকর্ড করেছে পুলিশ। দন্দের সময় সামান্য হাতাহাতি হয়েছিলো কিন্তু মামলার এজাহারে ঘটনাটি অতিরঞ্জিত ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই শৈলেন বলেন, ‘আসামীদের গ্রেফতার করার উদ্দেশ্যে একাধিকবার অভিজান চালিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি। মামলার প্রথম আসামী ঢাকায় পালিয়ে রয়েছেন। ৩জন আসামী আদালতের মাধ্যমে জামিন নিয়েছেন এবং একজনকে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।’
ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম জানান, এ মামলায় প্রশাসনিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, পুলিশের উদাসীনতার কারণে প্রতিনিয়ত আতঙ্কে দিন কাটছে বাদীপক্ষের। মিলনের দাবি, যথাযথ নিরাপত্তার অভাবে তার পরিবার চরম অসহায় অবস্থার মধ্যে রয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার এখন নিরাপত্তার পাশাপাশি দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন স্বজনেরা।
##