ডিমলায় ব্যতিক্রমী মুসাফিরখানায় থাকা-খাওয়ার সবই বিনামূল্যে

✒️ডিমলা (নীলফামারী) থেকে:

by Newsroom

 

অজানা-অচেনা পথিকদের জন্য এক মহান উদ্যোগ নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার দক্ষিণ বালাপাড়া গ্রামের এক ব্যক্তি। তার নির্মিত ব্যতিক্রমী মুসাফিরখানায় অতিথিরা যতদিন ইচ্ছে থাকতে পারেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। থাকার পাশাপাশি অতিথিদের জন্য বিনামূল্যে খাবারের ব্যবস্থাও রয়েছে।

মুসাফিরখানায় রয়েছে একটি বড় ও একটি ছোট কক্ষ, যেখানে বাথরুমসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা দেওয়া হয়েছে। বাইরে রয়েছে একটি ইবাদতখানা। বিলাসবহুল না হলেও একজন পথিকের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই এখানে রয়েছে। বাড়ির লোকজন নিজেরা যা খান, তা দিয়েই অতিথিদের আন্তরিক আপ্যায়ন করেন, যা সত্যিই প্রশংসনীয়।

মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১০ সালে আব্বাস উদ্দীন সরকার এটি তৈরী  করেছেন। কিন্তু তৈরীর ছয় বছর পরেই তিনি মারা যান। এই অতিথিশালার সামনেই তাকে সমাহিত করা হয়েছে। আব্বাস উদ্দীনের ছয় জন ছেলেই কৃষি কাজের সাথে জড়িত। নিজেরা খুব বেশী স্বচ্ছল না হলেও বাবার এই মহৎ কাজ ঐতিহ্য হিসেবে ধরে রেখেছেন।

মরহুম আব্বাস উদ্দীনের ছেলে রফিকুল ইসলাম ও আনারুল ইসলাম জানান, অতিথিদের থাকা-খাওয়ার খরচ বহনের জন্য বাবা আমাদের নির্দেশ করে গেছেন। আজীবন যেনো এই ধারা অব্যাহত থাকে। এই নির্দেশ অনুযায়ী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে মরহুম আব্বাস উদ্দীন সরকারের সন্তানেরা। কোনো সরকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মুসাফিরখানার সংস্কার আরো জাঁকজমক করতে চাইলে সে ক্ষেত্রে সহযোগীতা করবেন বলে তারা জানান।

আব্বাস উদ্দীনের স্ত্রী রহিমা বেগম জানান, আমার স্বামী রাজনীতি করার সুবাধে বিভিন্ন জায়গায় সফর করতো। সফরকালীন সময়ে নানান ধরনের কষ্টকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলো। তার সেই চিন্তা থেকে কোনো মুসাফিরের যেনো এমন কষ্টকর পরিস্থিতির সম্মুখীন না হয় সেজন্য তিনি এই মুসাফিরখানা তৈরী করেছে। মৃত্যুর পূর্বে তিনি এটা রক্ষণাবেক্ষণ এর জন্য পরিবারের সদস্যদের নির্দেশ দিয়ে গেছেন।

মুসাফির শুধু রাতযাপন করে তা নয়, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে খাবার দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে। মুসাফিরখানায় উচু নিচু সকল স্তরের অতিথিদের আনাগোনা থাকে। নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলা সহর থেকে পশ্চিমে ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এছাড়া জেলা শহর নীলফামারী থেকে উত্তরে ৬৪ কিলোমিটার দূরে এটি অবিস্থত।

You may also like

Leave a Comment